SIR New Rules: এসআইআরে জাল নথি দিলে, হবে সাত বছরের জেল! ভুয়ো ভোটার আটকাতে কড়া শাস্তি।
SIR-এ জাল নথি জমা দিলে এবার আর রেহাই নেই—সরাসরি হতে পারে সাত বছরের জেল ও মোটা জরিমানা! ভুয়ো ভোটার রুখতে নির্বাচন কমিশন প্রথমবারের মতো এত কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

SIR New Rules: এস.আই.আরে জাল নথি জমা দিলে সেই ব্যক্তির সাত বছরের জেল হতে পারে। এই ব্যাপারে ভারতবর্ষের নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে, গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ৯ই ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO)-এর দফতর থেকে লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি যদি SIR-এ জাল নথি জমা দেন, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাজা হিসেবে জেলের পাশাপাশি হতে পারে মোটা টাকার জরিমানাও। ভুয়ো ভোটার রুখতে এবার নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করল। স্পষ্টভাবে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানিয়ে দিয়েছে যে SIR পর্বে কোনো ব্যক্তি যদি ডকুমেন্টস বা পরিচয়পত্র জাল করে, তবে তার বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি নেওয়া হবে।
কমিশনের বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৩৭ ধারা অনুসারে কোনও ব্যক্তি যদি SIR-এ আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, জন্ম, ম্যারেজ কিংবা ডেট সার্টিফিকেট বা আদালতের কোনো ডকুমেন্ট, সরকারি অফিসের নথিপত্র বা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির মতো গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসের আসল কপি না জমা না দিয়ে, যদি জাল ডকুমেন্টস জমা দেন তবে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে দোষীর সাত বছর পর্যন্ত জেল এবং মোটা টাকা জরিমানাও হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, জাল ডকুমেন্টস করার মত অসাধুতার কাজ কখনোই বরদাস্ত করা হবে না। রাজ্য বাসীদের উদ্দেশ্যে গত মঙ্গলবার এই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে SIR-এ কেউ নথি জালের মতো অসাধুতার আশ্রয় নিলে আইন মেনে তার সাজার ব্যবস্থা করা হবে। কারাদণ্ডের সাথে হতে পারে মোটা টাকার জরিমানাও।
পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক সময়ে SIR-এর কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। বহু মানুষেরা SIR-এর জন্য ইতিমধ্যেই তাদের ডকুমেন্টস জমা দিয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের বিরোধী দলের বহু নেতারা অভিযোগ তুলেছেন যে SIR-এর কাজ চললেও রাজ্য থেকে ভুয়া ভোটাদের নিষ্পত্তি ঘটানো যাচ্ছেনা। ভুয়ো ভোটাররা কিন্তু এই রাজ্যেই রয়ে যাচ্ছেন।
অনেকেই দাবি করেছেন যে বহু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে, পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করার মনস্থির করেছে। এই ভুয়া পরিচয়পত্রের মানুষেরা অন্য কোনো ব্যক্তি কে নিজের বাবা-মা সাজিয়ে জাল ডকুমেন্টস তৈরি করে সেটি SIR-এ জমা দিচ্ছেন। এবার কমিশনের তরফ থেকে ভুয়া ভোটারদের নাম স্বচ্ছ তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অথবা AI-এর সাহায্য নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা AI দিয়ে রাজ্যবাসীদের নথিগুলি স্ক্যান করবে। কোনো ব্যক্তি যদি তথ্যে গরমিল করে তাহলে তা সহজেই ধরা যাবে এবং ভুয়ো অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা যাবে।
আর মাত্র দুদিন পরেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এনুমারেশন ফর্ম আপলোড করার সময়সীমা শেষ হচ্ছে। আগামী ১৬ই ডিসেম্বর নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। ওই দিন প্রকাশিত ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যাবে ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত। আগামী ১৬ই থেকে ০৭ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা, বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া, বিতর্কের নিষ্পত্তি ঘটানো, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে শুনানিতে (হিয়ারিং) ডাকা এবং সন্দেহ দূর করার কাজ ERO-রা করবেন।
পরিশেষে বলা যায় যে, নির্বাচন কমিশনের এই কঠোর পদক্ষেপ ভুয়া ভোটারদের নাম স্বচ্ছ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে অনেকটাই সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি সাত বছরের জেল এবং জরিমানার মত আইনত শাস্তি, বহু ডকুমেন্ট জাল করার মতো অসাধু মানুষকে নিরস্ত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সতর্কতার ফলে বহু অসাধু মানুষ যেমন ডকুমেন্টস জাল করবে না, আবার প্রতিটি জনসাধারণ মানুষ নিজেদের দায়িত্বের সাথে SIR-এর নথি সংক্রান্ত কাজটি সম্পন্ন করবে।

